জবর খবর বাংলা

অনলাইন-পাঠে বঞ্চনা থেকে শুরু করে পেটের তাগিদে নানা কাজে নামতে বাধ্য হওয়ায় শিশুশ্রম বৃদ্ধির সমস্যায় ছোটরা ভীষণ ভুগছে বলেই জানাচ্ছে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা


নিজস্ব প্রতিবেদন: মানুষ বড় ভুগছে । শিশুরা ভুগছে আরও বেশি । সাধারণ রোগবালাই তো আছেই । তার উপরে অতিমারিতে স্কুল বন্ধ । অনলাইন-পাঠে বঞ্চনা থেকে শুরু করে পেটের তাগিদে নানা কাজে নামতে বাধ্য হওয়ায় শিশুশ্রম বৃদ্ধির সমস্যায় ছোটরা ভীষণ ভুগছে বলেই জানাচ্ছে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা । 

ওয়েস্ট বেঙ্গল রাইট টু এডুকেশন ফোরাম এবং ক্যাম্পেন এগেনস্ট চাইল্ড লেবার নামে দু’টি নাগরিক সংগঠন সমীক্ষা চালিয়ে দেখতে চেয়েছিল, লকডাউন পর্বে পশ্চিমবঙ্গে শিশুদের অবস্থা ঠিক কী রকম । বাংলার ১৯টি জেলায় ২১৫৪ জন খুদে পড়ুয়ার মধ্যে ওই সমীক্ষা চালিয়ে যে-তথ্য উঠে এসেছে, তাতে উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ আছে বলে জানাচ্ছেন সমীক্ষকেরা । দেখা যাচ্ছে: রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনলাইনে পঠনপাঠনের সুযোগ পেয়েছে মাত্র ২৯ শতাংশ পড়ুয়া । বাকিরা সেই সুযোগ-সুবিধা পায়নি । নানা কারণে পরিবারের আয় কমে যাওয়ায় ১৭% শিশুর নিয়মিত দু’‌বেলা আহার জোটেনি । স্কুল বন্ধ থাকায় এবং পারিবারিক আয়ে টান পড়ায় শিশুশ্রম বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে । পড়ুয়াদের মধ্যে ছেলেদের ক্ষেত্রে শিশুশ্রম বৃদ্ধির হার ৯৪.৭% । কিন্তু মেয়ে পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ওই হার প্রায় ১১৩% বেড়েছে । অর্থাৎ লকডাউনের দরুন ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মধ্যে শিশু শ্রমিক হিসেবে কাজে নামার হার বেড়েছে। সামগ্রিক বিচারে ওই হার ১০৫ % !

করোনা আবহে ব্যাহত হচ্ছে শিশুদের চিকিৎসাও। এই সময় পর্বে অসুস্থ হলেও ১১ শতাংশ খুদে পড়ুয়া যথাযথ চিকিৎসা পায়নি বলে ওই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে। সোমবার একটি ওয়েবিনারের মাধ্যমে সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। সাধারণ ভাবে সারা বছরের নিরিখে ওই সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় । এ বার লকডাউন পর্বে মে ও জুনের পরিসংখ্যান নিয়ে বিশেষ সমীক্ষা চালানো হয়েছিল । শিশুদের উপরে এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রভাব বুঝতেই এই সমীক্ষা বলে জানায় সংশ্লিষ্ট দু’টি নাগরিক সংগঠন । তাদের সমীক্ষা জানাচ্ছে: এ রাজ্যে যত সংখ্যক পড়ুয়া অনলাইন-পাঠের সুবিধা পাচ্ছে, তা জাতীয় গড়ের দ্বিগুণের বেশি । বঙ্গে ওই হার ২৯% হলেও দেশে তা মাত্র ১৪ !


Post a Comment

Previous Post Next Post