জবর খবর বাংলা


চন্দননগর পুরসভার উদ্যোগে শহরের ক্যানসার হাসপাতালে চালু হল কোভিড-ক্যাম্প। শনিবার।

  • লালারসের নমুনা পরীক্ষা বাড়ানো।
  • শহরকে জীবাণুমুক্ত করার কাজে জোর।
  • মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।
  • বাজারে ভিড় কমানো।
  • সংক্রমিতদের পরিবারের বর্জ্য সংগ্রহ।

এই পাঁচ দফা ব্যবস্থায় চন্দননগর শহরের বেলাগাম করোনা পরিস্থিতিকে বাগে আনতে উদ্যোগী হল জেলা প্রশাসন। সেই কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে।

রাজ্যের অন্য বেশ কিছু এলাকার মতো এ শহরেও সংক্রমণ বাড়ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, চন্দননগরে এখন করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ত্রিশেরও বেশি। কেউ ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। কেউ রয়েছেন গৃহ-নিভৃতবাসে। এই সংখ্যার বাড়বাড়ন্ত রোধেই কোমর বেঁধেছে প্রশাসন।

চন্দননগরের পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু বলেন, ‘‘শহরে করোনা রুখতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। আশা করছি, প্রশাসনের সব স্তরের কর্মীদের চেষ্টায় আমরা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা নিতে সক্ষম হব।’’

লকডাউন-পর্বে চন্দননগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই ওয়ার্ডের অনেকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরো ওয়ার্ডকে ঘিরে দেওয়া হয়েছিল। তারপরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও তা স্থায়ী হয়নি। ফের ওই ওয়ার্ডের একাংশকে ‘গণ্ডিবদ্ধ’ করা হয়েছে। সেখানে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এ ছাড়াও, শহরের ৬, ৩৩ এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশও ‘গণ্ডিবদ্ধ’ রয়েছে।

ক’দিন আগে চন্দননগরের মহকুমাশাসকের দফতরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায় করোনায় মারা যান। সেই ঘটনায় প্রশাসনের অন্দরে আতঙ্ক ছড়ায়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, চন্দননগরে তাই এমন পদক্ষেপ জরুরি, যাতে একই সঙ্গে করোনাকে বাগে আনা যায় এবং প্রশাসনিক মহলেও ভরসা জোগানো যায়। সে জন্যই পাঁচ দফায় ব্যবস্থা পথে হাঁটছে প্রশাসন। 

প্রশাসন ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে লালারসের নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে। এ বার শহরের ক্যানসার হাসপাতালেও এ জন্য ক্যাম্প শুরু হয়েছে। যাতে পরীক্ষায় গতি আসে। শহরের চিহ্নিত এলাকাগুলির মানুষজনকে ওই ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

পুরসভার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই শহরকে জীবাণুমুক্ত করতে তিনটি দল নেমেছে। সেই কাজে গতি বাড়াতে এ বার কাজে লাগানো হবে দমকলকে। যাতে ওয়ার্ড ধরে সেই কাজ হয়। মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এ নিয়ে জেলার দমকল-কর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা কত কর্মীকে নিযুক্ত করতে পারবেন, ক’টা দল জীবাণুমুক্ত করার কাজে নামবে, তার হিসেব-নিকেশ চলছে।   

প্রশাসনকে ভাবাচ্ছে, এক শ্রেণির মানুষের অ-সচেতনতা। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও এখনও কিছু মানুষ নিয়ম করে স্ট্র্যান্ডে যাচ্ছেন। সেখানে অনেকের মুখেই মাস্ক থাকছে না এবং তাঁরা দূরত্ব-বিধিরও পরোয়া করছেন না বলে অভিযোগ। তা ছাড়া, মাস্কহীন মোটরবাইক আরোহীদেরও দেখা মিলছে অহরহ।

এই বিপজ্জনক প্রবণতা রুখতে পুলিশ আরও কড়া হচ্ছে। পুরসভার কয়েকটি দলকেও রাস্তায় নামানো হচ্ছে। যাতে রাস্তায় কারও মুখে মাস্ক না-থাকলে তা দেওয়া হয়। শনিবারই মাছের আড়ত-সহ চন্দননগরের চারটি বাজার পরিদর্শন করে পুরসভার একাধিক দল। তাদের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই সব বাজার বন্ধ বা সময়ের পরিবর্তনের ব্যাপারে পর্যালোচনা করবে পুরসভা ও প্রশাসন। 

এ ছাড়াও, যে সব পরিবারে সংক্রমণ ঘটেছে, তাদের আলাদা পাত্র দেওয়া হয়েছে বর্জ্যের জন্য। সেই সব পরিবার থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে পুরসভার বিশেষ দল মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া শুরু করেছে। ওই বর্জ্যে জীবাণুনাশক স্প্রে করে সেখান থেকে কলকাতার একটি সংস্থা নিয়মিত তা সংগ্রহ করছে।
~খবর সংগৃহিত

Post a Comment

Previous Post Next Post