দিঘা, এপ্রিল ১৬:
আর মাত্র কয়েকদিন। আগামী ৩০ এপ্রিল, অক্ষয় তৃতীয়ার পবিত্র দিনে, সমুদ্র শহর দিঘা পেতে চলেছে এক ঐতিহাসিক উপহার—জগন্নাথধামের শুভ উদ্বোধন ও দেবতার প্রাণপ্রতিষ্ঠা। সেই উপলক্ষে আজ নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের একাধিক দফতরের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করলেন। মঞ্চ প্রস্তুতি থেকে শুরু করে ট্রাফিক ও নিরাপত্তা, সব বিষয়েই দেওয়া হয়েছে কড়া নির্দেশ।
🔱 কবে কী হবে? বিস্তারিত সময়সূচি:
২৯ এপ্রিল:
- পবিত্র যজ্ঞের মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা। যজ্ঞ পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন পুরীর রাজেশ দৈতাপতি এবং তাঁর টিম।
- মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপস্থিত থাকবেন দিঘায় যজ্ঞের দিন।
- শুরু হবে নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা ও ট্রাফিক কন্ট্রোল ব্যবস্থা।
- সকাল ১১টা: রাজেশ দৈতাপতি ও পুরীর সেবায়েতরা দেবতার প্রাণপ্রতিষ্ঠা করবেন।
- বেলা ২:৩০: দিঘা কনভেনশন সেন্টারে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য সরকারি অনুষ্ঠান।
- বেলা ৩:১০: দ্বারোদঘাটন ও জগন্নাথ মন্দিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।
🎯 নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার উপর জোর:
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিশাল জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে মহাকুম্ভমেলার মতো সুসংহত ও কড়া।
- প্রতিটি রাস্তায় থাকবে ট্রাফিক গাইড ও পুলিশের নজরদারি।
- CCTV স্থায়ীভাবে বসানো হবে, থাকবে “May I Help You” শিবির ও মেডিক্যাল ক্যাম্প।
- মুখ্যমন্ত্রী নিজের পক্ষ থেকে দেবেন ৫ লাখ ১ হাজার টাকা মূল্যের সোনার ঝাড়ু।
- তিনি অনুরোধ করবেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কাছে স্বেচ্ছাসেবক দেওয়ার জন্য।
🏨 সাংবাদিকদের জন্য থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা:
- লারিকা হোটেলে সাংবাদিকদের রাখা হবে।
- জেলা পরিষদের তৈরি নতুন ভবনটি হস্তান্তর করা হয়েছে, যেখানে থাকবে পুলিশ ও দমকল বাহিনী।
- রাজ্যের ডিজি ২৮ তারিখ থেকেই থাকবেন দিঘায়।
🎭 উদ্বোধনের আগেই সাংস্কৃতিক আয়োজন:
উদ্বোধনের প্রাক্কালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে জগন্নাথধামের চত্বরে। মন্দিরে খালি পায়ে প্রবেশ বাধ্যতামূলক, মুখ্যমন্ত্রী নিজেও খালি পায়ে যাবেন বলে জানান।
🏗️ ভবিষ্যতের রূপরেখা:
এই জগন্নাথধাম প্রকল্পের দায়িত্ব একপ্রকার হস্তান্তর করা হচ্ছে ইসকনকে, যাতে এটি ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,
“দিঘা শুধু পর্যটনের কেন্দ্র নয়, এবার হয়ে উঠবে এক ধর্ম, সংস্কৃতি ও কর্মসংস্থানের মিলনক্ষেত্র।”
এই বৃহৎ আয়োজনের মাধ্যমে বাংলার পর্যটন ও ধর্মীয় পরিকাঠামোয় যুক্ত হতে চলেছে এক ঐতিহাসিক অধ্যায়। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘা হয়ে উঠবে এক নতুন তীর্থক্ষেত্র—আপনিও কি প্রস্তুত এই মহোৎসবের সাক্ষী হতে?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন