লাল্টু ভট্টাচার্য্য , নদীয়া : রাত পোহালেই মহালয়া , কিন্তু বাজারে মিলছে না রেডিওর হদিস । শহরের বেশ কয়েক জন ইলেক্ট্রনিক্স মিস্ত্রির সাথে কথা বলে জানা গেল বর্তমান প্রজন্ম এখন প্রযুক্তি নির্ভর । এখন রেডিওর থেকে মানুষ মোবাইল ও ইন্টারনেটের প্রতি বেশি আগ্রহী , সেখান থেকেই মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটিয়ে নিচ্ছেন । মুষ্টিমে়য় হাতেগোনা কয়েকটি দোকানে রেডিওর হদিস মিলল কিন্তু দামটা যেনো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের নাগালের বাইরে ।
একটু বেলা বাড়তেই বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল গুলিতে টলিপাড়ার শিল্পীরা কেউ দুর্গার ভূমিকায় আবার কেউ মহিষাসুরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন মহালয়ের দিন তাদের পারফরম্যান্স প্রদর্শন করতে । কিন্তু এভাবে সমস্ত মানুষের মনের খোরাক মিটছে কি ?
মানসিকভাবে অনেকেই হতাশ হচ্ছেন মা দুর্গার ভূমিকায় জনৈক কোনো নায়িকার বিরক্তিকর ও বিভ্রান্তিমূলক নৃত্য প্রদর্শন দেখে , আবার অসুরের ভূমিকায় কোনো পরিচিত সিরিয়ালের মুখ দেখলেও বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই । বারংবার অসুরের নৃত্য প্রদর্শন দেখে মনে হচ্ছে মা দুর্গার সাথে যুদ্ধের সময় সত্যিই কি মহিষাসুর এতটাই নেচেছিলেন ? নাকি এটা অতিনাটকীয় বিষয় । টেলিভিশনের সামনেই সমালোচনায় মুখর হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের বিরুদ্ধে , মুহূর্তের মধ্যেই আপনার হাতের রিমোটের দ্বারা টেলিভিশনের পর্দা পরিবর্তিত হচ্ছে । আবার সেখানেও ওই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি । পরিশেষে প্রত্যেকেই স্বীকার করছেন প্রযুক্তির দুনিয়ায় এখনো পর্যন্ত নয়া কোনো হাতিয়ারের উদ্ভাবন করা সম্ভব হলো না যার দ্বারা রেডিওর সাথে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব হয় । সুতরাং , সহজেই বলে দেওয়া যায় ওল্ড ইস গোল্ড।
তবে অনেক মানুষকেই আজ দেখা গেছে দোকানে রেডিও কিনতে যেতে বা পুরনো রেডিও মেরামত করার জন্য ইলেকট্রিক মিস্ত্রির শরান্নপন্ন হতে । কারণ রাত পোহালেই মহালয়া , আমাদের অনেকেরই ঘুম ভাঙ্গবে সেই বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠ ও তার সাথে স্বর্ণযুগের প্রতিভাবান কিছু শিল্পীর সুরেলা কণ্ঠের ধ্বনিতে । এককথায় বলাই যায় যার বাড়িতে যত চওড়ায় এল সি ডী বা এল ই ডি থাকুক না কেন ,রেডিওর পারফরম্যান্স এর কাছে প্রত্যেকেই হার মানতে বাধ্য । নদিয়া থেকে লাল্টু ভট্টাচার্যের রিপোর্ট।
Post a Comment