লাল্টু ভট্টাচার্য্য ও পীতম মুখার্জী : প্রাচীন রীতি মেনেই নদিয়া জেলার শান্তিপুর শহর অন্তর্গত চাঁদুনি বাড়িতে 12-ই অগাস্ট বুধবার নন্দোৎসব পালিত হলো , যদিও তার আগেই হয়েছে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী পূজা |
প্রাচীন শহর শান্তিপুরকে বলা হয় বৈষ্ণব ও শাক্তের মিলনক্ষেত্র | কারণ শান্তিপুর শহর প্রভু অদ্বৈতাচার্য্যের লীলাভূমি হওয়ায় গোস্বামী বা বিগ্রহ বাড়িগুলিতে উপাস্য দেবতা রাধাকৃষ্ণের যুগল মূর্তি ; শুধু তাই নয় , শান্তিপুর শহর ছাড়াও শহরের বাইরে তাদের অগণিত ভক্ত বা অনুগামী রয়েছেন | বিশেষ করে শহরের বুকে অনুষ্ঠিত প্রধান উৎসব রাসযাত্রার সময় বাইরে থেকে অসংখ্য ভক্তবৃন্দের সমাবেশ লক্ষ্য করা গেছে | রাত্রিকালে তাঁরা কেউ আশ্রয় নেন খোলা আকাশের নিচে আবার অনেকে প্যান্ডেলের নিচে |
আবার অন্যদিকে এই শহরেই আগমেশ্বরী , মহিষখাগি , চাঁদুনি , বোম্বাট ছাড়াও আরও অন্যান্য শতাব্দী প্রাচীন কালীমাতা পূজিত হন ক্লাব বারোয়ারি সহ সাধারণের বাড়িতেও |
তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে নন্দোৎসবের দিন চাঁদুনী বাড়িতেই প্রত্যক্ষভাবে প্রতীয়মান হয়ে উঠলো বৈষ্ণব ও শাক্তের মিলন ক্ষেত্র শান্তিপুর | নন্দোৎসবের দিনেই দূর্গা মায়ের পাট এ সিঁদুর দান বা যাকে বলা হয় প্রতিমার গায়ে মাটি দেবার কার্য অনুষ্ঠিত হলো | সামনেই পুজো আসছে , তাই প্রতিমা নির্মাণের সূত্রপাত ঘটলো শ্রীকৃষ্ণের নন্দোৎসব অনুষ্ঠান থেকেই | কলকাতায় এই পর্বকেই বলা হয় 'খুঁটিপুজো' যেটা আমাদের কাছে 'গায়েমাটি ' বা পাট- এ সিঁদুর দেয়া বলে পরিচিত | অর্থাৎ বিষ্ণুর অনুষ্ঠান থেকেই শক্তির দায়িনীর আরাধনার সূত্রপাত | সুতরাং বলাই যাই , বৈষ্ণব ও শাক্তের মিলনক্ষেত্রে উভয়ের মিলন সুসম্পন্ন হলো শান্তিপুরে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যমন্ডিত চাঁদুনি বাড়িতে |
Post a Comment